চাঁদের ধুলিকনা নিলামে

নিলামে উঠল নিল আর্মস্ট্রং এর সংগৃহীত চাঁদের ধূলিকণা

by Ashikullha Mhamud Tihim

অনেক বছর ধরে চাঁদের ধুলোগুলোকে ব্যক্তিগত হাত থেকে দূরে রাখতে আদালতে লড়াই করেছিল মহাকাশ সংস্থাটি। কিন্তু তা এই এপ্রিল মাসে বেশ মোটা অঙ্কের জন্য নিলামে উঠতে পারে। 1969 সালে অ্যাপোলো-11 মিশনে চাঁদে মানুষের প্রথম ভ্রমণের সময় নভোচারী নীল আর্মস্ট্রং এ চাঁদের ধূলিকণা গুলো সংগ্রহ করেছিলেন।

চাঁদের ধূলিকণা এর মূলতথ্য

  • আর্মস্ট্রং চাঁদের পৃষ্ঠে তার প্রথম পদক্ষেপের কিছুক্ষণ পরেই নমুনা হিসেবে ধূলিকণা সংগ্রহ করেছিলেন এবং তার বিখ্যাত লাইনটি উচ্চারণ করেছিলেন, “এটি মানুষের জন্য একটি ছোট পদক্ষেপ, মানবজাতির জন্য একটি বিশাল লাফ।”
  • Auction House Bonhams এর মতে আশা করা যায় সেই চাঁদের ধুলোটুকু 8,00,000 থেকে 1.2 মিলিয়ন মার্কিন ডলারে বিক্রি হতে পারে।
  • যে ব্যাগটিতে এই ধুলো ছিল, সেই ব্যাগটি এবং কিছু অবশিষ্ট ধুলকণা বিগত 2017 সালে 1.8 মিলিয়ন মার্কিন ডলারে নিলাম করা হয়েছিল।
  • Bonhams আরো বলেন, এই নিলামের টাকার একটি অংশ যাবে Scientific Charity তে।
  • প্রথম ক্রিত্তিম উপগ্রহ স্পুটনিক-1 এর কিছু অংশ এবং চাদের সংগ্রহকৃত ধুলোগুলো আগামী ১৩ এপ্রিল Space-Theme Auction এর অংশ হিসেবে নিলামে বিক্রি করা হবে।

চাঁদের ধূলিকণা নিলাম এর মূল পটভূমি

NASA চাদের ধূলিকণা নিলামের জন্য অনুমোদন দিয়েছে, তবে মহাকাশ সংস্থা NASA কখনই চায়নি নমুনাটি কারো ব্যক্তিগত হাতে যাক। 2015 সালে ন্যান্সি লি কার্লসন, U.S Marshal এর নিলামে 995 মার্কিন ডলার এ শুধুমাত্র লেবেল দেখে একটি ব্যাগ কিনেন। যাতে লিখা ছিল -“Flown zippered lunar sample returning with lunar dust”৷ কার্লসন তখন ব্যাগটি সম্বন্ধে আরও জানার জন্য ব্যাগটি NASA-তে পাঠিয়েছিলেন। তখন মহাকাশ সংস্থা বুঝতে পেরেছিল যে এটি Apollo 11 এর সাথে সম্পর্কযুক্ত। তাই তারা এটি ফেরত দিতে অস্বীকার করে। ব্যাগটি “আমেরিকান জনগণের” অধিকারভুক্ত এবং তা সর্বজনীন প্রদর্শনে রাখা উচিত বলে জানায় মহাকাশ কেন্দ্রটি।

চাঁদের ধূলিকণা এর ব্যাগ
এই ব্যাগ টি দিয়ে চাঁদের ধুলিকনাগুলো এনেছিলেন নিল আর্মস্ট্রং

NASA ধুলোর ব্যাগটি কখন হারিয়েছিল তা জানা যায় নি, কিন্তু 2002 সালে এটি Max Ary এর দখলে ছিল। Max Ary তখন চুরি করা জিনিস বিক্রির অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। 2003 সালে সেই ব্যাগটি আবার ফিরে পাওয়া যায় এবং পরে নিলামে তা বিক্রয়ের জন্য রাখা হয়, যেখানে কার্লসন এটি কিনেছিলেন। কার্লসন তার নিজস্ব সম্পত্তি অন্যায়ভাবে বাজেয়াপ্ত করার দায়ে NASA এর বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। 2016 সালে বিচারক জে. টমাস মার্টেন, কার্লসনের পক্ষে রায় দিয়েছিলেন এবং লিখেছিলেন যে, কার্লসন ব্যাগটি বৈধভাবে বিক্রয়ে “একজন ভাল বিশ্বাসের ক্রেতা” ছিলেন৷

গুরুত্বপূর্ণ উদ্ধৃতি

1969 সালে আর্মস্ট্রং চাঁদের ধূলিকণার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছিলেন “পৃষ্ঠটি অনেক পাতলা এবং মিহিকণা যুক্ত, আমি আমার পা দিয়ে ধুলাগুলোকে আলগাভাবে লাথি দিতে পারি। এটি আমার বুটের আশেপাশে এবং নিচে কয়লার গুড়োর মতো লেগে থাকে। আমি কেবল মাত্র এক ইঞ্চি করে আগাতে পাড়ছিলাম, সম্ভবত এক ইঞ্চিরও অষ্টমাংশে। কিন্তু আমি আমার বুটের ছাপ দেখতে পাচ্ছি এই পাতলা বালুময় পৃষ্ঠে।”

চাঁদে নিল আর্মস্ট্রং
চাঁদে নিল আর্মস্ট্রং

মোটা অংকের হিসাব  

2011 সালে নিলামে সোভিয়েত-যুগের একটি স্পেস ক্যাপসুল বিক্রি হয়েছিল, যার মূল্য ছিল 2.9 মিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা আজ পর্যন্ত রেকর্ড হিসেবে রয়ে গেছে। 1961 সালে মহাকাশচারী Yuri Gagarin মহাকাশে নিয়ে যাওয়ার পূর্বে, বিশ্বের প্রথম মহাকাশযান ভোস্টক I-এর প্রস্তুতিমুলক উৎক্ষেপণে ক্যাপসুলটির ব্যবহার করা হয়েছিল।

Elon Musk, Jeff Bezos এবং Richard Branson এর মতো ধনী ব্যবসায়ীদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে মহাকাশযানের প্রতিষ্ঠানগুলো মহাকাশযানের সামগ্রী তৈরিতে বাজারে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে – যাকে “Billionaire Space Race” বলে ডাকা হয়। । মহাকাশিক কোন বস্তু বা উল্কাপিণ্ডের মতো বহির্জাগতিক উপকরণ গুলো গত কয়েক বছরে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। 2017 সালে, NASA আর্টেমিস প্রোগ্রাম চালু করার ঘোষণা করেছিল, যার প্রধান লক্ষ্য ছিল 1972 সালে অ্যাপোলো-17 এর প্রথমবারের মতো ক্র-মিশনের পর আবারো চাঁদে নতুন একটি ক্র-মিশন পাঠানো।

For News That Matters, Click- NewsRetina

Related Posts

Leave a Comment

NewsRetina