USA ban TikTok

চীনের Tik Tok নিয়ে আবারো অভিযোগ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের।

by Suborna Kabir Jyoti

জাতীয় নিরাপত্তায় ঝুঁকি সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে , এই কারণ দেখিয়ে কানাডা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে পুরোপুরি ভাবে Tik Tok বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সরকারি কর্মীদের ফোনে। ফোনে টিকটক থাকলে, যে কোনোভাবে সরকারি ডেটা ফাঁস হয়ে যেতে পারে। ফলে বিঘ্নিত হতে পারে দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এদিকে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং দাবী করছেন, কোনো সুনিদির্ষ্ট প্রমাণ ছাড়াই টিকটককে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে প্রচার করছে মার্কিন প্রশাসন।

নাগরিকদের ডেটা চুরির অভিযোগ Tik Tok এর বিরুদ্ধে-

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, চীনের টেক সংস্থা বাইটডান্সের (bytedance) মালিকানাধীন টিকটক আমেরিকান নাগরিকদের ডেটা চুরি করে, সেই ডেটা চীন সরকারের হাতে তুলে দিচ্ছে। এমনও অভিযোগ রয়েছে টিকটক ৫০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের বৌদ্ধিক সম্পত্তি ( Intellectual Property) চুরি করে নিয়েছে।

গত মাসে হোয়াইট হাউস দেশের সরকারি সংস্থাগুলিতে ৩০ দিনের সময় সীমা বেধে দিয়েছে। তার মধ্যে টিকটক অ্যাপ পুরোপুরি মুছে ফেলতে হবে সমস্ত সরকারি ডিভাইস এবং নেটওয়ার্ক থেকে।

“Restricting the Emergence of Security Threats that Risk Information and Communications Technology (RESTRICT) Act.” যাকে সংক্ষেপে রেস্ট্রিক্ট বলা হচ্ছে। এই বিল আইনে পরিণত হলে জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট চিন, রাশিয়া, ইরান,কিউবা ভেনিজুয়েলা এবং উত্তর কোরিয়ার মতো ৬ টি দেশের যেকোনো প্রযুক্তির ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে পারবেন।

ইতিমধ্যেই ১২ টি মার্কিন প্রদেশে সরকারি মোবাইলে এবং কিছু কলেজ ও ইউনিভার্সিটিতে টিকটক নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু বিশ্বের ১৫০ টি দেশের ৩৯ টি ভাষায় ৫০ কোটি মানুষ যে অ্যাপ ব্যবহার করে ( যার মধ্যে মার্কিন ইউজার ১২ কোটিরও বেশি) তাকে কি এত সহজে বাদ দেওয়া যেতে পারে?

রাজনৈতিক বিবাদের প্রতিফলন?

যুক্তরাষ্ট্রে সব ধরনের সরকারি ফোন থেকে Tik Tok ডিলিট করার জন্য সরকার নির্দেশ দেওয়ার পর চাইনা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। ওয়াশিংটনের এই সিদ্ধান্তের পর চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র মাও নিং যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বলেছেন যে- বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে দমন করতে তারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করছে।“আমরা এই ভুল সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করি”, মঙ্গলবার সাংবাদিকদের ব্রিফিং করার সময় এ কথা বলেন মাও নিং।

তিনি আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের উচিত বাজার অর্থনীতি এবং ন্যায্য প্রতিযোগিতার নীতিমালাকে সন্মান করা, কোম্পানি দমন বন্ধ করা এবং বিদেশি কোম্পানি গুলো যেন মুক্ত, ন্যায্য এবং বৈষম্যহীন ভাবে প্রতিযোগিতা করতে পারে তার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা।

‘ তরুণ-তরুণীদের কাছে জনপ্রিয় টিকটকের মতো একটি অ্যাপকে ভয় পাওয়ার ঘটনা থেকে বোঝা যায় যুক্তরাষ্ট্রের মতো সুপারপাওয়ার একটি দেশ তাদের নিজেদের ব্যাপারে কতটা অনিশ্চিত থাকতে পারে’, বলেন তিনি।

Tiktok er CEO চিউ এর তথ্য মতে,” টিকটকের ওপর চীন সরকারের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে বা চীন সরকারকে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবহারকারীদের তথ্য প্রদান করা হয় এইটা একেবারেই অসত্য”।

সিএনএন এর একটি বার্তায় চিউ বলেন- বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ১৫০ মিলিয়িন মানুষ টিকটক ব্যবহার করছেন। এখানে তারা কন্টেন্ট বানাচ্ছে, শিখছে, শেয়ার করছে, আনন্দ পাচ্ছে। এটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ মূহূর্ত। টিকটকের পক্ষ থেকে গত সপ্তাহে একটি ডকু-সিরিজ বানানো হয়েছে। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা নিজেদের জীবিকা নির্বাহে কীভাবে টিকটকের উপর নির্ভরশীল,  তা তুলে ধরা হয়েছে।

টিকটকের বিরুদ্ধে ডেটা চুরির অভিযোগের সত্যতা কতটুকু?

টিকটক কীভাবে কাজ করে, এর ডাটা সংরক্ষণ এবং এলগরিদম নিয়ে অনেক প্রশ্ন তুলেছে অনেকগুলো দেশ। কিন্তু এই অ্যাপের বিরুদ্ধে যেই অভিযোগ তোলা হয়েছে তার কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি এখনও।

প্রমাণ না পাওয়ায় বিশ্লেষকরা ধারণা করছে, টিকটকের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ মূলত দেশটির রাজনৈতিক বিবাদের প্রতিফলন। মার্কিনদের ধারণা এখন এমন যে, চীনাদের তৈরি কোনো কিছুই এখন বিশ্বাসযোগ্য না। ঠিক যেমন “জাতীয় নিরাপত্তা সুরক্ষার” নামে চীনা কোম্পানি হুয়াওয়েইর সাথে যা ঘটেছিল। সে অভিযোগের পক্ষে আজ পর্যন্ত কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি কেউ।

এর আগেও মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অভিযোগ তুলেছিলেন মার্কিন নাগরিকদের ডেটা চুরি এবং চীনা সরকারের সাথে তথ্য বিনিময় করে থাকে টিকটক।

কিন্তু টিকটক কতৃপক্ষ শুরু থেকেই বলে আসছে, এইসব অভিযোগ মিথ্যা। এবং চীনা কোম্পানি জানিয়েছেন, ব্যবহারকারীর তথ্য তারা যেগুলো সংগ্রহ করে তা চীনের বাইরে সংরক্ষণ করা হয়। এবং যুক্তরাষ্ট্রের ডেটা যুক্তরাষ্ট্রেই সংরক্ষণ করা হয় এবং তার ব্যাকআপ রাখা হয় সিঙ্গাপুরে। (সুত্র-Reuters)

for more information

For The News That Matters To You, Click- NewsRetina

Leave a Comment

NewsRetina