বিদ্যুৎ তৈরি করছে ব্যাকটেরিয়া, বসবাস করছে “Skyscraper” এ  !!

by Tahsinul Islam Nishat

গবেষকরা ব্যাকটেরিয়াদের এর জন্য ক্ষুদ্র Skyscraper তৈরি করেছে যাতে সূর্যের আলো এবং পানির সাহায্যে তারা বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে।

ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটির গবেষকরা 3D Printer এর সাহায্যে ক্ষুদ্র Skyscraper-এ সূর্যপ্রেমী ব্যাকটেরিয়াদের জন্য ছোট ছোট ঘর তৈরি করেছে যেখানে তারা দ্রুত বৃদ্ধি ঘটাতে পারবে। পরবর্তীতে গবেষকরা ব্যাকটেরিয়াদের ফটোসিন্থেসিস প্রক্রিয়ায় অবশিষ্ট ইলেকট্রন বের করে এনে তা ছোট ইলেক্ট্রনিক যন্ত্র চালনায় ব্যাবহার করতে সক্ষম হয়েছে।

অন্য একদল গবেষক ফটোসিন্থেটিক ব্যাকটেরিয়া থেকে সরাসরি শক্তি সংগ্রহ করেছে। কিন্তু ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটির গবেষকরা তাদের গবেষণায় দেখতে পারে এই ব্যাকটেরিয়াদের সঠিক ধরনের আবাস প্রদান করলে এদের শক্তি আহরণের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। এই পদ্ধতিটি নবায়নযোগ্য জৈব শক্তি উৎপাদনের সাধারন পদ্ধতিগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা গড়ে তুলবে এবং ইতিমধ্যে সৌর শক্তি রূপান্তরে দক্ষতা অর্জন করেছে।

Nature Materials নাম এর জার্নালে বলা হয়েছে তাদের ফলাফল জৈব শক্তি উৎপাদনে নতুন পথ উন্মুক্ত করেছে। তারা এটাও বলে যে সৌর শক্তির বায়োহাইব্রিড উৎসগুলো Zero-Carbon Energy মিশ্রণে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হতে পারে।

বর্তমানের অন্যতম নবায়নযোগ্য প্রযুক্তি হলো সিলিকন ভিত্তিক সৌর কোষ এবং জৈব জ্বালানী।  তবে এর সীমাবদ্ধতাও আছে। যেমন-

  • খনির উপর নির্ভরতা,
  • নবায়নযোগ্য করনের সীমাবদ্ধতা
  • কৃষি জমির উপর নির্ভরতা (যা জীব-বৈচিত্র্যের ক্ষতি করে।)

কিন্তু এগুলোর তুলনায় এই প্রক্রিয়াটি অনেক বেশি পরিবেশবান্ধব। গবেষণার দায়িত্তে থাকা ডঃ জেনি ঝাং বলেন, “আমাদের লক্ষ্য ভবিষ্যতের জন্য আরও বেশি টেকসই নবায়নযোগ্য শক্তির ডিভাইস তৈরি।” ডঃ জেনি ঝাং এবং তার সহকর্মীরা বায়োএনার্জিকে টেকসই এবং স্কেলযোগ্য কিছুতে পুনর্বিবেচনা করার জন্য কাজ করছেন।

Bacteria Skyscraper

সায়ানোব্যাকটেরিয়া যা সালোকসংশ্লেষী ব্যাকটেরিয়া নামেও পরিচিত তারা হল পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচুর্যময় জীব। বেশ কয়েক বছর ধরে, গবেষকরা সায়ানোব্যাকটেরিয়ার সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়াগুলিকে পরিবর্ধন করার চেষ্টা করছেন যাতে তাদের থেকে সরাসরি শক্তি সংগ্রহ করা যায়। ডঃ জেনি ঝাং জানান “সালোকসংশ্লেষণ সিস্টেম থেকে আপনি আসলে কতটা শক্তি আহরণ করতে পারবেন তার একটি বাধা রয়েছে, তবে বাধাটি কোথায় ছিল তা কেউ বুঝতে পারেনি।” তিনি আর জানান “বেশিরভাগ বিজ্ঞানীরা মনে করেন যে বাধাটি ব্যাকটেরিয়ার জৈবিক দিকে ছিল কিন্তু আমরা খুঁজে পেয়েছি বাধাটি আসলে বস্তুগত দিকে।”

যথাযথ বৃদ্ধির জন্য এদের প্রচুর পরিমান সূর্যের আলো প্রয়োজন। এবং সালোকসংশ্লেষণের মাধ্যমে তারা যে শক্তি উৎপন্ন করে তা সংগ্রহ করার জন্য ব্যাকটেরিয়াগুলোকে ইলেক্ট্রোডের সাথে সংযুক্ত করতে হবে। ক্যামব্রিজ গবেষকেরা মেটাল অক্সাইড ন্যানো পার্টিকেল থেকে 3D-প্রিন্টেড ইলেক্ট্রোড তৈরি করেছে যেগুলো সায়ানোব্যাকটেরিয়ার সালোকসংশ্লেষণ থেকে শক্তি সংগ্রহ করতে পারবে। ইলেক্ট্রোডগুলি অত্যন্ত ঘন ও শাখাযুক্ত স্তম্ভের কাঠামোর মতো প্রিন্ট করা হয়েছে।

ডঃ জেনি ঝাং এর দল এমন একটি প্রিন্টিং পদ্ধতি আবিস্কার করেছে যা দিয়ে তারা একাধিক মাপ নিয়ন্ত্রন করতে পারে। এর ফলে কাঠামোগুলকে নিজেদের পছন্দের মতো তৈরি করতে পারে। এই প্রযুক্তিটি অন্যান্য খাঁতেও গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতে পারবে।

যখন সায়ানোব্যাকটেরিয়াগুলো তাদের নতুন ঘড়ে একত্রিত হোল তখন গবেষকরা দেখতে পারলো যে তারা অন্যান্য শক্তির উৎস যেমন বায়োফুয়েল, থেকে অনেক বেশি দক্ষ ও কার্যকর। জৈব শক্তি উৎপাদনের অন্যান্য পদ্ধতির তুলনায় তাদের এই পদ্ধতি অনেক বেশি পরিমান শক্তি উৎপাদন করতে সক্ষম।

“পরীক্ষাগুলো থেকে আমরা যা ফলাফল পেয়েছি তা দেখে আমি আশ্চর্য হয়েছি। অনুরূপ ফলাফল বহু বছর ধরে আনুমান করা হয়েছে, কিন্তু এই প্রথমবার এই ফলাফলটি পরীক্ষামূলকভাবে দেখতে পেরেছি আমরা” বলেন ডঃ জেনি ঝাং। তিনি আরোও বলেন “সায়ানোব্যাকটেরিয়াগুলো হলো একটি বহুমুখী রাসায়নিক কারখানার মতো। আমাদের পদ্ধতির মাধ্যমে আমরা তাদের শক্তি তৈরির প্রক্রিয়াটি ভিতর থেকে পর্যবেক্ষণ করতে পারি এবং তাদের প্রাকৃতিক পদ্ধতি ব্যাবহার করে নবায়নযোগ্য জ্বালানি তৈরি করতে পারি।”

For the NEWS that matters, click- NewsRetina

Related Posts

Leave a Comment

NewsRetina