নেটওয়ার্কিংয়ের ভবিষ্যত হিসাবে Metaverse তৈরি করতে বিলিয়ন বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করছে Meta। কিন্তু বর্তমান সময়ে, Meta ব্যবহারকারীদের মেসেজিংয়ের দিক দিয়ে সংযোগ করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তাই whatsapp মেসেজিং অ্যাপে একটি উল্লেখযোগ্য আপডেট আসতে যাচ্ছে, যা ব্যবহারকারীদের আরও বেশি সংখ্যক সদস্য নিয়ে গ্রুপ চ্যাট এবং ভিডিও কনফারেন্স করার সুবিধা প্রদান করবে। বড় ধরনের ফাইল শেয়ারিং, 32-ব্যক্তির গ্রুপ কল এবং নতুন ইমোজি, সেইসাথে অ্যাডমিন টুলস এবং মডারেশন কন্ট্রোল থাকবে নতুন এই Whatsapp Communities-এ।
Whatsapp প্ল্যাটফর্মের পরবর্তী বড় বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ফিচার হিসাবে আসতে যাচ্ছে। ফিচারটি এখন Whatsapp এর অধীনে development এর জন্য রয়েছে। বৃহত্তর সামাজিক প্ল্যাটফর্মের বাইরে ব্যক্তিগত communities-গুলো ব্যবহারকারীদের বিশেষভাবে আকর্ষণ করে, যেমন ফেসবুক।
Communities, টেলিগ্রামের মতো অন্যান্য মেসেজিং অ্যাপগুলির জন্য চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সম্পর্কিত যোগাযোগের ক্ষেত্রে দৃষ্টি কেড়েছে এই Telegram। এছাড়াও অন্যান্য মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম, যেমন iMessage, সিগন্যাল, গ্রুপমি, ব্যান্ড, রিমাইন্ড এগুলো সবার সাথে যোগাযোগ করতে ব্যবহৃত হয়।
Meta-এর CEO মার্ক জ্কারবার্গ তার একটি পোস্টে বলেন, “এটি পরিষ্কার ভাবে বলা যায় যে, আমাদের অনলাইনে যোগাযোগ করার মাধ্যম পরিবর্তন হচ্ছে। আমাদের মধ্যে বেশিরভাগই আপডেট থাকতে সামাজিক নেটওয়ার্ক এবং newsfeed ব্যবহার করি। কিন্তু বর্তমানে, মেসেজিং আমাদের ডিজিটাল জীবনের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। এটি আরও সুপরিচিত, ব্যক্তিগত এবং এনক্রিপশন সহ এটি আরও সুরক্ষিত হইয়ে উঠেছে।”
কি এই Whatsapp Communities?
এই ফিচারটি প্রাথমিকভাবে Facebook গ্রুপগুলির সাথে প্রতিদ্ধন্দিতার দিকে নিয়ে যেতে পারে। Facebook-এর একটি আরও প্রাইভেট নেটওয়ার্কিং টুল যা পাবলিক ডেটা অনুসারে প্রতি মাসে 1.8 বিলিয়ন ব্যবহারকারীদের কাছে পৌঁছে। বিভিন্ন গ্রুপগুলোর মতো WhatsApp Communities, কোন ক্লাব বা স্কুলগুলিকে তাদের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ এবং তথ্য আদান-প্রদান করার জন্য নেটওয়ার্ক তৈরি করার অনুমতি দেবে৷
উদাহরণস্বরূপ, একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তাদের আলোচনার জন্য একটি উপ-গ্রুপের মতো Community তৈরি করতে পারে। অভিভাবকরা তাদের বাচ্চাদের বয়সের উপর ভিত্তি করে ছোট ছোট-গ্রুপ হোস্ট করতে পারে। স্কুলে বিভিন্ন পর্যায় বা পাঠ্যক্রমের বহির্ভূত কার্যকলাপের জন্য ছোট-গ্রুপের ব্যাবহার করতে পারে। কোন ক্লাব তাদের বিভিন্ন ইভেন্ট এবং কার্যক্রমের পরিচালনা করার জন্য সাব-গ্রুপ হোস্ট করতে পারবে এবং আরও অনেক কিছু।
তবে Facebook গ্রুপ WhatsApp Communities-এর সাথে কিছু ওভারল্যাপ থাকতে পারে। কিন্তু দুটি একই উদ্দেশ্যে ডিজাইন করা হয়নি। Facebook-এর নেটওয়ার্ক অনেকটাই বৃহত্তর, মাঝে মাঝে অপরিচিত ব্যক্তিরাও আমাদের সাথে তাদের আগ্রহ শেয়ার করতে পারে এবং ছবি বা বিভিন্ন পোস্টে কমেন্ট করতে পারে। অন্যদিকে হোয়াটসঅ্যাপ আরও ব্যক্তিগত এবং পরিচিত ব্যক্তিদের দিকে ফোকাস করে।
হোয়াটসঅ্যাপের প্রধান Will Cathcart পার্থক্য ব্যাখ্যা করে বলেন, “আমরা ফোন নম্বর ভিত্তিক যোগাযোগের দিকে বেশি নজরদারি করি। যখন আপনি WhatsApp-এ লোকেদের সাথে ইন্টারঅ্যাক্ট করছেন, তখন তাদের সাথে আপনার ফোন নম্বর আদান-প্রদানও হচ্ছে। তাই এটি সেই গ্রুপের দিকে নির্দেশ করে যেখানে আপনি এই ব্যক্তিদের বাস্তব জীবনে চেনে থাকেন। যদিও আপনাদের বাচ্চার ক্লাসের প্রতিটি অভিভাবকের ফোন নম্বর আপনার কাছে নেই, তবে আপনি এইভাবে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।”
WhatsApp Communities, ব্যবহারকারীরা অন্যদের ফোন নম্বর দেখতে সক্ষম হবে। যারফলে তারা তাদের সাথে ছোট সাব-গ্রুপগুলিতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। তারা Facebook গ্রুপের চেয়ে এটিকে আরও ব্যক্তিগত মনে করবেন।
WhatsApp Communities এবং Facebook গ্রুপের মধ্যে আরেকটি মূল পার্থক্য হল, whatsapp-এ এমন গ্রুপ রয়েছে যার প্ল্যাটফর্মে সর্বজনীন বা পরিবর্তনযোগ্য। অন্যদের গ্রুপে যোগদানের জন্য আপনাকে গ্রুপগুলিতে আমন্ত্রণ জানাতে হবে।
অ্যাডমিন টুল মেসেজিং-এ যেভাবে কাজ করবে
তাদের গ্রুপ সংখ্যা বাড়ানোর জন্য, তারা পৃথকভাবে Communities সদস্যদের যোগ করতে পারবেন। অথবা তারা একটি invitation link-এর মাধ্যমে গ্রুপে আমন্ত্রণ জানাতে পারবেন। ক্লাব এবং অন্যান্য গ্রুপের, যেখানে সদস্যরা আসে এবং যায়, সেখানে এডমিন প্রয়োজন অনুসারে একটি communities থেকে পৃথকভাবে সদস্যদের সরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। এছাড়াও, শুধুমাত্র এডমিনদের কোন ঘোষণা গ্রুপের মাধ্যমে সমস্ত communities সদস্যদের সাথে শেয়ার করার ক্ষমতা থাকবে। Whatsapp Communities সদস্যরা শুধুমাত্র এডমিন হতে তৈরি বা অনুমোদিত ছোট গ্রুপগুলিতে চ্যাট করতে সক্ষম হবে। হোয়াটসঅ্যাপ যেকোন নিউস ফরওয়ার্ডগুলিকেও সীমিত করবে। কমিউনিটিতে, যে বার্তাগুলি শুধুমাত্র একটি গ্রুপে ফরোয়ার্ড করা যাবে।
Communities-গুলো বার্তাপ্রেরণের নতুন কিছু পন্থা নিয়ে আসে। যার মধ্যে গ্রুপের এডমিনদের সকল বিষয়বস্তু নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা অন্যতম। এডমিনরা প্রত্যেকের চ্যাট থেকে ভুল বার্তা বা কোন মিডিয়া মুছে ফেলতে সক্ষম হবেন। এডমিনরা গ্রুপে 2GB পর্যন্ত ফাইল ট্রান্সফার করতে সক্ষম হবে। Communities একসাথে 32 জন লোকের সাথে ভয়েস কল হোস্ট করতে সক্ষম হবে।
আবার ব্যবহারকারীদেরও Communities-এ যুক্ত হওয়ার উপর নিয়ন্ত্রণ থাকবে। WhatsApp-এর সেটিংসে, ব্যবহারকারীরা সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন, কে তাদের একটি গ্রুপে যুক্ত করতে পারবে। এখন সেই একই সেটিংস Communities-এ প্রযোজ্য হবে৷ ব্যবহারকারীরা Communities-এ অংশ না নিতে চাইলে তারা তা ছেরে যেতে পারবেন। ব্যবহারকারীরা স্বাভাবিকভাবেই কোন গ্রুপ ছেড়ে যেতে পারে, যা WhatsApp চ্যাটের মতো অন্যান্য ব্যবহারকারীদের জানান দিবে না।
এটি প্রাথমিকভাবে একটি পাবলিক রোলআউটের আগে, Whatsapp Communities-একটি সীমিত পরীক্ষায় চালু করা হচ্ছে। WhatsApp এই ফিচারটি কখন ব্যাপকভাবে জনসাধারণের কাছে পৌঁছাবে তা এখনো জানা যায়নি। তবে Communities-এর কিছু নতুন কার্যকারিতা, যেমন প্রতিক্রিয়া, ফাইল-শেয়ারিং এবং 32-ব্যক্তির কল – শীঘ্রই চালু করবে বলে জানা যায়।
For the News that matters to you, click- NewsRetina